নতুন ফুয়েল সেল উদ্ভাবন করল MIT: বৈদ্যুতিক বিমানের সম্ভাবনা জাগাচ্ছে
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT)-এর গবেষকরা তৈরি করেছেন এক ধরনের নতুন ফুয়েল সেল, যা বর্তমানের সেরা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির চেয়ে তিন গুণ বেশি শক্তি ধারণ করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক ট্রাক, জাহাজ এবং আঞ্চলিক বিমানের জন্য শক্তির উৎস হিসেবে বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন এই শক্তিশালী ফুয়েল সেলটি তরল সোডিয়াম ধাতু ব্যবহার করে চালানো হয় — একটি সস্তা ও সহজলভ্য উপাদান, যা একটি ছিদ্রযুক্ত ইলেকট্রোডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অক্সিজেনের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি কেজিতে এই সেলের শক্তি ধারণক্ষমতা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি। MIT-এর অধ্যাপক ইয়েট–মিং চিয়াং, যিনি এই প্রোটোটাইপ তৈরিতে সহায়তা করেছেন, জানিয়েছেন—এই সেল দিয়ে বৃহৎ আন্তঃমহাদেশীয় বিমান চালানো সম্ভব না হলেও, এটি আঞ্চলিক বৈদ্যুতিক উড্ডয়ন প্রযুক্তিকে বাস্তবতার মুখ দেখাতে পারে। এছাড়াও এটি নৌ ও রেল পরিবহনে “বিপ্লব ঘটাতে” পারে বলে মত দিয়েছেন তিনি।
চিয়াং আরও বলেন, “এই সব পরিবহন পদ্ধতির জন্য অত্যন্ত উচ্চ শক্তি ঘনত্ব এবং কম খরচের প্রয়োজন হয়। আর এই দুটো গুণই রয়েছে সোডিয়াম ধাতুর মধ্যে, যা আমাদের এই পথে নিয়ে এসেছে।”
অতিরিক্ত একটি পরিবেশবান্ধব দিক হলো, এই ফুয়েল সেল ব্যবহারের পর তৈরি হওয়া সোডিয়াম বাইকার্বনেট যদি শেষ পর্যন্ত সমুদ্রে পৌঁছায়, তাহলে তা পানির অম্লতা কমাতে সাহায্য করতে পারে — যা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে।
চিয়াং মজা করে বলেন, “আমরা আশা করি মানুষ এটাকে একদম পাগলামি মনে করবে। কারণ, কেউ যদি শুরুতেই এমন কিছু পাগলামি মনে না করে, তবে সেটি বোধহয় খুব একটা বিপ্লবী কিছু নয়।”
এই গবেষণার সদস্যরা ইতোমধ্যেই Propel Aero নামে একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা MIT-এর স্টার্টআপ ইনকিউবেটর The Engine-এ অবস্থান করছে। কোম্পানিটি এখন এই প্রযুক্তিকে বাণিজ্যিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে।
এই নতুন উদ্ভাবন আগামী দিনে বৈদ্যুতিক পরিবহন ও পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।