রোজমেরি: স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে নতুন আলোচনায়
প্রাচীনকাল থেকেই স্মৃতি ও মনঃসংযোগ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে একটি সুগন্ধি গাছ- রোজমেরি। গ্রিস ও রোমান যুগের ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষার আগে রোজমেরি ব্যবহার করতেন মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে। আধুনিক গবেষণায় এখন সেই বিশ্বাসের বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও পাওয়া যাচ্ছে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রোজমেরির গন্ধ গ্রহণ করেছেন, তারা স্মৃতিসংক্রান্ত কাজে তুলনামূলকভাবে ভালো ফল করেছেন অন্যদের তুলনায়। এতে ধারণা করা হচ্ছে, রোজমেরির সুগন্ধ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে।
রোজমেরি কীভাবে কাজ করে?
গবেষকরা বলছেন, রোজমেরি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যার ফলে মস্তিষ্কে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান পৌঁছায়। এটি মানসিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া রোজমেরির মধ্যে রয়েছে প্রশান্তিদায়ক গুণাবলি, যা উদ্বেগ কমাতে ও ঘুম উন্নত করতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ কমলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তিও বাড়ে।
এছাড়া রোজমেরিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নামক মস্তিষ্ককোষ ধ্বংসকারী প্রক্রিয়াকে ঠেকাতে সহায়ক। এ ধরনের ক্ষয়প্রবণতা বয়সজনিত স্মৃতিভ্রংশ বা আলঝেইমার-এর মতো রোগের জন্য দায়ী।
রোজমেরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারনোসিক অ্যাসিড, যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবে কাজ করে। এটি মস্তিষ্ককোষকে সুরক্ষা দেয়, বিশেষত আলঝেইমারের সঙ্গে সম্পর্কিত ক্ষতির বিরুদ্ধে।
মস্তিষ্কের যত্ন ছাড়াও রোজমেরির আরও উপকারিতা রয়েছে। এটি হজমে সহায়তা করে, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমায় ও দেহে প্রদাহ হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ভবিষ্যতে আলঝেইমারসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসায় রোজমেরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে—এমন আশাবাদ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে তার আগেই রোজমেরিকে খাদ্য, চা কিংবা সুগন্ধি তেলের মাধ্যমে প্রতিদিনের জীবনে যুক্ত করা যেতে পারে।
রোজমেরি এখন হয়ে উঠছে স্বাস্থ্য রক্ষার এক প্রকৃতিশক্তি।