স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে খাবারে সচেতনতা জরুরি
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় নিউরোডিজেনারেশন। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, কিছু নির্দিষ্ট ধরনের খাদ্য নিয়মিত গ্রহণ করলে এই অবক্ষয়ের গতি কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশেষ করে মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট এবং মাইন্ড ডায়েট (MIND Diet) অনুসরণকারী ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে ভালো থাকে।
সবুজ শাকসবজি: এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত সবুজ শাকসবজি, গ্রিন টি, আখরোট এবং Mankai নামের একটি পুষ্টিকর উদ্ভিদ খেয়েছেন, তাদের বয়সভিত্তিক মস্তিষ্ক ক্ষয়ের হার ছিল সবচেয়ে কম। গবেষণাটি ১৮ মাস ধরে চালানো হয় এবং এতে দেখা যায়, যাঁরা সবুজ-ঘন ডায়েট মেনে চলেছেন, তাদের মস্তিষ্ক সুস্থ থেকেছে দীর্ঘ সময়। ৫০ বছর বয়স পার করা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফলাফল ছিল বিশেষভাবে ইতিবাচক।
রঙিন ফল ও সবজি: ব্লুবেরি, গাজর, বেগুন, ব্রোকলি কিংবা বেল পিপারের মতো রঙিন সবজি-ফল কেবল সৌন্দর্যই নয়, স্মৃতিশক্তি রক্ষাতেও কার্যকর। এই ধরনের ফলমূল ও সবজিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভোনয়েড মস্তিষ্কে স্নায়ু কোষের ক্ষয় রোধ করে। ২০২১ সালের এক গবেষণায় প্রায় ৭৭,০০০ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যারা বেশি ফ্ল্যাভোনয়েড গ্রহণ করেছেন, তাদের কগনিটিভ ক্ষমতা ছিল অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল।
মাছ: চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল, টুনা ইত্যাদি, মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। এসব মাছের মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড স্নায়ু কোষকে সুস্থ রাখে এবং বয়সজনিত মানসিক অবক্ষয় প্রতিরোধ করে।
বাদাম: বিশেষ করে আখরোট, বারবার গবেষণায় মস্তিষ্কের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। ২০২১ সালের একটি পর্যালোচনা গবেষণায় ২২টি ভিন্ন গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যেসব ব্যক্তি নিয়মিত বাদাম খেয়েছেন, বিশেষ করে যাদের কগনিটিভ ডিক্লাইনের ঝুঁকি বেশি ছিল, তারা তুলনামূলক ভালো ফল পেয়েছেন।
উপসংহার: স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে ও মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রঙিন ও পুষ্টিকর খাবার, যেমন সবুজ শাকসবজি, মাছ, বাদাম ও রঙিন ফলমূলকে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে বয়সজনিত মানসিক অবক্ষয় অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।