‘বাদামের রাজা’ আখরোটের অসাধারণ উপকারিতা
অবাক করার মতো নয় যে আখরোটকে বলা হয় ‘বাদামের রাজা’। আধুনিক পুষ্টি বিজ্ঞান ও দীর্ঘজীবন গবেষণায় খাবারকে ওষুধ হিসেবে দেখার যে ধারা গড়ে উঠছে, সেখানে আখরোট একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিবছর আয়োজিত হয় আন্তর্জাতিক আখরোট সম্মেলন, যেখানে বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা আখরোটের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেন।
🟫 মস্তিষ্কের জন্য উপকারী
আখরোটের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং পলিফেনল আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের HUM2N লংজিভিটি ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এনায়াত বলেন, “আখরোটে রয়েছে ডিএইচএ, যা স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।” ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে মিউজলি ও দইয়ের সঙ্গে আখরোট খেলে সারাদিন স্মৃতি ও প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা উন্নত হয়।
🟫 হজমতন্ত্রের জন্য উপকারী
পুষ্টিবিদ নিকোলা লুডল্যাম-রেইন বলেন, “আখরোট একটি প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে যা উপকারী অন্ত্রব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হিসেবে কাজ করে।”
🟫 ইনফ্ল্যামেশন হ্রাসে সহায়ক
ডা. জে শাহ বলেন, “আধুনিক অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগের মূল কারণ ইনফ্ল্যামেশন। আখরোটে থাকা ওমেগা-৩ এবং পলিফেনল প্রাকৃতিকভাবে ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করে।”
🟫 ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
যদিও আখরোট উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, তবুও এর প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বির সংমিশ্রণ ক্ষুধা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। “দুপুরের পর হালকা ক্ষুধা লাগলে আখরোট ও ফল একসঙ্গে খেলে ক্ষুধা মেটে এবং অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার প্রবণতা কমে,” বলেন লুডল্যাম-রেইন।
🟫 রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
আখরোটে রয়েছে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও আর্জিনাইন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড, যা রক্তনালীগুলোকে প্রশমিত করে রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
🟫 বয়সজনিত সমস্যা প্রতিরোধে
আখরোট কোষীয় পর্যায়ে মাইটোকন্ড্রিয়াল কার্যকারিতা বাড়িয়ে বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা ও রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আখরোট খেলে হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
🟫 রক্তের চর্বি কমায়
ডা. শাহ জানান, আখরোট এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে সহায়তা করে এবং কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে।
🥜 আখরোট শুধু একটুকরো বাদাম নয়, এটি স্বাস্থ্যকর জীবনের এক অনন্য সহচর।