আকাশে বিরল বৈদ্যুতিক ঝলক: গিগান্টিক জেট
বৈদ্যুতিক ঝলকের এক বিরল রূপ গিগান্টিক জেট। সাধারণ বজ্রপাত যেখানে মাটির দিকে নেমে আসে, সেখানে এই বিশেষ ধরনের বজ্রপাত আকাশের দিকে ছুটে যায়! তবে এই দৃশ্য খুব কমই ধরা পড়ে ক্যামেরায়। সম্প্রতি, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (ISS) থেকে তোলা একটি ছবিতে এই বিরল গিগান্টিক জেটের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন এক বজ্রপাত গবেষক।
ফ্র্যাঙ্কি লুসেনা, যিনি বজ্রপাত সংক্রান্ত বিভিন্ন ছবি বিশ্লেষণ করেন, তিনি Gateway to Astronaut Photography of Earth ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পান। ছবিটি এক অজ্ঞাত নভোচারীর তোলা হলেও, Spaceweather.com অনুসারে, ISS-এর অবস্থান বিচার করে ধারণা করা হচ্ছে যে, গিগান্টিক জেটটি নিউ অরলিন্সের উপকূলের কাছাকাছি কোথাও ঘটেছিল।
গিগান্টিক জেট কী?
গিগান্টিক জেট হলো এক ধরনের বিশাল বজ্রপাত, যা মেঘের চার্জযুক্ত স্তরগুলো উল্টে গেলে উপরের দিকে ধাবিত হয়। এটি প্রধানত নীলচে আলো নির্গত করে, কারণ উচ্চ স্তরের বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন থাকে। তবে, এই আলোক ঝলক সাধারণত এক সেকেন্ডেরও কম সময় স্থায়ী হয়।
উর্ধ্বমুখী কেন? রহস্য এখনো অজানা:
বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন, কেন গিগান্টিক জেট সাধারণ বজ্রপাতের মতো নিচের দিকে না গিয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে, বজ্রপাত মেঘের নিচের স্তর দিয়ে বের হতে বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে তা বিপরীত দিকে ছুটে যায়। তবে, এই ব্যাপারে গবেষণা এখনো চলছে।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ বজ্রপাত:
গিগান্টিক জেটকে “পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বজ্রপাত” বলা হয়, কারণ এটি প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কিমি) উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা সরাসরি আয়নোস্ফিয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, এই বজ্রপাত সাধারণত সমুদ্রের ওপরে বেশি দেখা যায়, এবং বিমানযাত্রীদের আতঙ্কিত করার ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিরল বজ্রপাতের আরও অনুসন্ধান প্রয়োজন, যাতে এর গঠন ও কারণ সম্পর্কে আরও বিশদ তথ্য জানা যায়। তবে এটি নিশ্চিত যে, গিগান্টিক জেট এক অত্যাশ্চর্য প্রকৃতিক ঘটনা, যা আকাশে বিরল কিন্তু বিস্ময়কর সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।