প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচন: গুগল ও এইচপি সম্প্রতি একসঙ্গে ঘোষণা দিয়েছে তাদের নতুন ৩ডি ভিডিও যোগাযোগ প্রযুক্তি “প্রজেক্ট স্টারলাইন” সম্পর্কে। দীর্ঘদিন ধরে ভিডিও কনফারেন্সিং আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে লকডাউনের সময় এটি ছিল অর্থনৈতিকভাবে এক গুরুত্বপূর্ণ সমাধান। তবে সত্যি বলতে, “জুম ফ্যাটিগ” বা অনবরত ভার্চুয়াল মিটিংয়ের ক্লান্তি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছিল।

স্টারলাইনের লক্ষ্য: ভার্চুয়াল বৈঠকে বাস্তব অনুভূতি: প্রথমবার ২০২১ সালে গুগলের এক ব্লগ পোস্টে স্টারলাইনের ধারণা প্রকাশ করা হয়েছিল। এই প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো, ভিডিও কলে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের অনুভূতিকে বাস্তবসম্মত করা—যেন তারা একই কক্ষে বসে কথা বলছেন। গুগল জানিয়েছে, এই প্রযুক্তি ২০২৫ সালের শেষের দিকে বাজারে আসতে পারে, তবে এর খরচ কেমন হবে, তা এখনো স্পষ্ট করা হয়নি।

কীভাবে কাজ করবে প্রজেক্ট স্টারলাইন? স্টারলাইনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি ব্যবহারকারীদের স্মার্ট গ্লাস বা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেটের প্রয়োজন ছাড়াই ৩ডি অভিজ্ঞতা দেবে। এর জন্য ব্যবহৃত হবে ছয়টি ক্যামেরা, যা রিয়েল-টাইম ৩ডি ভিডিও তৈরি করে। এরপর এই স্পেশালাইজড ডেস্কটপ ডিসপ্লে, “লাইট-ফিল্ড ডিসপ্লে”-এর মাধ্যমে প্রতিচ্ছবি প্রদর্শন করা হবে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সংযোজন: গুগল জানিয়েছে, তাদের অত্যাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের মুখ ও কানের অবস্থান শনাক্ত করা হবে, যাতে শব্দ এমনভাবে প্রতিফলিত হয় যেন প্রতিপক্ষ সরাসরি সামনে বসে আছেন। গবেষণা বলছে, এই প্রযুক্তি ভিডিও কনফারেন্সের মানসিক চাপ অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে।

স্টারলাইনের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা: গুগল ও এইচপি এখনো এর মূল্য নির্ধারণ করেনি। তবে এটি গুগল মিট ও জুমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। যদি এটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়, তবে ভবিষ্যতে রিমোট কাজের অভিজ্ঞতায় নতুন বিপ্লব আনতে পারে।