ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল সোসাইটির বিশেষজ্ঞদের মতে, সুখী থাকার জন্য কিছু কার্যকর কৌশল রয়েছে, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করতে পারে।

সুখের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন-প্রায়ই বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা যায়, কোথায় সবচেয়ে সুখী মানুষ থাকে বা কোন অভ্যাসগুলো মানুষকে সুখী করে। তবে কানাডার গবেষকরা দেখেছেন, সুখের সন্ধান করতে গিয়ে মানুষ সময়কে সীমিত বলে মনে করে, যা উল্টো তাদের অসুখী করে তোলে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘সুখ খোঁজার প্রচেষ্টা কখনো কখনো মানসিক শান্তি নষ্ট করতে পারে।’ তাই সুখী হওয়ার জন্য চাপ না নিয়ে জীবনকে স্বাভাবিকভাবে উপভোগ করাই ভালো।

জীবনকে মানসিকভাবে সমৃদ্ধ করুন- সুখ মানেই কেবল আনন্দ নয়; এটি বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে গঠিত। ২০২১ সালের এক গবেষণায় মার্কিন মনোবিজ্ঞানী শিগেহিরো ওশি ও এরিন ওয়েস্টগেট বলেছেন, ‘সুখী জীবন’ নিয়ে গবেষণাগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষা করেছে, যাকে তারা ‘মানসিক সমৃদ্ধি’ বলেছেন। বিভিন্ন নতুন ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনকারী অভিজ্ঞতা—যা কখনো কখনো কঠিন বা বেদনাদায়কও হতে পারে—জীবনকে মানসিকভাবে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে।

জীবনকে সহজ করুন- সুখী থাকার জন্য কম জিনিসেও সন্তুষ্ট থাকা গুরুত্বপূর্ণ। লেখক ম্যাট হেইগ বলেন, “আমরা এখন অসংখ্য বিকল্পের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছি।” হাজারো টিভি শো, বই, বন্ধুত্ব, ক্যারিয়ার, ভ্রমণ, সংবাদ, অ্যাপ, খাবার—এই সীমাহীন পছন্দের বোঝা আমাদের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তাই জীবনের অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বাদ দিয়ে সেটাকে সহজ করে তোলাই সুখের একটি চাবিকাঠি হতে পারে।

স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করুন- গবেষণায় দেখা গেছে, স্বেচ্ছাসেবী কাজ শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে না, এটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং সামাজিক সংযোগ দৃঢ় করে। কর্মক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবায় অংশগ্রহণকারী কর্মীরা কাজের প্রতি বেশি আত্মনিবেদিত হন এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে। তবে চার্টার্ড মনোবিজ্ঞানী ড. নিশাত বাবু মনে করেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত কর্মীদের জন্য ছোট কর্মঘণ্টা, নমনীয় কাজের সময়সূচি এবং স্বেচ্ছাসেবার জন্য নির্দিষ্ট ছুটির ব্যবস্থা করা।

শেষ কথা- সুখী থাকার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সূত্র নেই, তবে জীবনকে মানসিকভাবে সমৃদ্ধ করা, অপ্রয়োজনীয় চাপ এড়িয়ে চলা এবং সমাজের কল্যাণে কাজ করা—এই বিষয়গুলো আমাদের মানসিক সুস্থতা ও সুখ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।