সপ্তাহে ১-৬টি ডিম খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে: নতুন গবেষণা।
একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে ১ থেকে ৬টি ডিম খেলে সব ধরনের মৃত্যুর ঝুঁকি কমে, বিশেষ করে হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুর আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।
বিগত কয়েক দশক ধরে ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতির বিষয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। ডিম উচ্চমানের প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও এর কোলেস্টেরল উপাদান নিয়ে অনেকেরই দুশ্চিন্তা রয়েছে, বিশেষত হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির আশঙ্কা।
তবে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার মনাশ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই বিষয়ে নতুন করে গবেষণা পরিচালনা করেছেন, যেখানে মূলত বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে ডিম গ্রহণ এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় ৮,৭৫৬ জন অস্ট্রেলীয় ও আমেরিকান ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।
ডিম খাওয়া কীভাবে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়? মনাশ ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ ও প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিভাগের গবেষক হলি ওয়াইল্ড, যিনি এই গবেষণার প্রধান লেখক, বলেন, “ডিম একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার। এতে উচ্চমানের প্রোটিন ছাড়াও বি-ভিটামিন, ফলেট, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, ডি, এ, কে, কোলিনসহ বিভিন্ন খনিজ ও ট্রেস উপাদান রয়েছে। এটি বয়স্কদের জন্য সহজলভ্য এবং উপকারী প্রোটিনের একটি প্রধান উৎস।”
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ব্যক্তি প্রতি সপ্তাহে ১ থেকে ৬টি ডিম খেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি ২৯ শতাংশ এবং সব ধরনের মৃত্যুর ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমেছে। এছাড়া, যারা উচ্চ বা মাঝারি মানের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেছেন এবং সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ডিম খেয়েছেন, তাদের হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি যথাক্রমে ৩৩% এবং ৪৪% হ্রাস পেয়েছে।
বয়স্কদের জন্য ডিম খাওয়ার পরামর্শ গবেষকরা বলছেন, “আমাদের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ছয়টি ডিম খাওয়া বয়স্কদের জন্য উপকারী হতে পারে এবং এটি সব ধরনের মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই তথ্য ভবিষ্যতে বয়স্কদের জন্য পুষ্টিবিষয়ক নির্দেশিকা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”