লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী কিউ গার্ডেনে উদ্বোধন হলো নতুন এক আকর্ষণ—কার্বন গার্ডেন, যা দর্শনার্থীদের দৈনন্দিন জীবনে পরিবেশ রক্ষার পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করবে।

৬,৫০০ গাছপালা ও ৩৫টি নতুন বৃক্ষ নিয়ে সাজানো এই বাগানে রয়েছে ছত্রাক দ্বারা অনুপ্রাণিত এক অনন্য কেন্দ্রীয় প্যাভিলিয়ন, যা স্থায়ীভাবে রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনে সংরক্ষিত থাকবে। ১৭৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই উদ্যান বর্তমানে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি পেয়েছে।

কার্বন গার্ডেন তুলে ধরছে—পৃথিবীতে জীবনের স্থিতি বজায় রাখতে কার্বনের ভূমিকা, জলবায়ু সংকটের ভয়াবহতা এবং কীভাবে প্রকৃতি ব্যবহার করে এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব। প্রদর্শনীতে জানানো হচ্ছে, গাছপালা ও ছত্রাক প্রাকৃতিকভাবে কার্বন ধরে রেখে এবং ভারসাম্য ফিরিয়ে দিয়ে জলবায়ু মেরামতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাগানের কেন্দ্রস্থলে fungi-আকৃতির প্যাভিলিয়নের ছাদ

বাগানের কেন্দ্রস্থলে fungi-আকৃতির প্যাভিলিয়নের ছাদ বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে ‘রেইন গার্ডেনে’ পৌঁছে দেয়। এখানে স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কমিউনিটির জন্য শিক্ষামূলক কার্যক্রমও আয়োজন করা হবে। এছাড়া রয়েছে একটি প্রদর্শনী, যেখানে দেখা যাবে মাটির স্তর, পাথুরে অংশ এবং কয়লার স্তর—যেখানে জীবাশ্ম উদ্ভিদ মাটির নিচের কার্বনের গোপন জগৎ উন্মোচন করছে।

এখানে স্থাপন করা তথ্যফলকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ফটোসিনথেসিস প্রক্রিয়ার কথা, যেখানে গাছপালা কার্বন ডাই অক্সাইডকে জৈব পদার্থে রূপান্তর করে। এছাড়াও আছে এক ‘ড্রাই গার্ডেন’ যেখানে ল্যাভেন্ডারের মতো তাপ-সহিষ্ণু উদ্ভিদ রোপণ করা হয়েছে।

কার্বন গার্ডেনের নকশাকার ও কিউ গার্ডেনের ডিজাইন ম্যানেজার রিচার্ড উইলফোর্ড বলেন—
“কার্বন গার্ডেন আমাদের চলমান গবেষণাকে তুলে ধরার এক অনন্য সুযোগ। এখানে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, নান্দনিক নকশা ও সুন্দর বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে কার্বনের ভূমিকা, পরিবেশে তার চলাচল এবং কীভাবে উদ্ভিদ ও ছত্রাক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। আমরা আশা করি, এই বাগান দর্শনার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং তারা একটি টেকসই ও সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়তে আমাদের সাথে যুক্ত হবেন।”

কিউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি তাদের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী বাগান প্রকল্পগুলোর একটি।