বর্জ্যের উপর সবজি চাষ! বিশ্বে প্রথমবারের মতো অভিনব পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যে
যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারে অবস্থিত একটি ল্যান্ডফিল (বর্জ্যভূমি) এলাকাকে ব্যবহার করে সবজি ও ফলমূল চাষের পরিকল্পনা নিয়েছে এক স্থানীয় প্রতিষ্ঠান—যা বলা হচ্ছে, বিশ্বের প্রথম এমন উদ্যোগ।
এই ব্যতিক্রমী পরিকল্পনার আওতায়, বর্জ্য থেকে উৎপন্ন পরিষ্কৃত কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) ব্যবহার করে ল্যান্ডফিলের উপর স্থাপন করা হবে বিশেষ গ্রিনহাউস, যেখানে সারাবছর ধরে স্থানীয়ভাবে খাবার উৎপাদন করা হবে। এমনকি অ্যাভোকাডো জাতীয় তাপমাত্রা সংবেদনশীল ফলমূল চাষের কথাও ভাবা হচ্ছে, যা সাধারণত যুক্তরাজ্যে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয় না।
কিভাবে কাজ করবে প্রকল্পটি?
উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে বর্জ্য থেকে নির্গত মিথেন গ্যাস সংগ্রহ করে নিজস্ব কার্যক্রম চালায় এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে পাঠায়। এবার তারা গঠন করেছে এক সামাজিক উদ্যোগ—‘সাসটেইন উইল্টশায়ার’, যার অধীনে এই খাদ্য উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী:
- ল্যান্ডফিলের একটি বড় অংশ সমতল করে তৈরি করা হবে বিশেষ পিট বা “সেল”, যেগুলো কংক্রিট দিয়ে সিল করা থাকবে।
- এই সেলগুলোতে বর্জ্য রাখা হবে, যাতে তা থেকে গ্যাস উৎপন্ন হয়।
- উৎপন্ন গ্যাস সংগ্রহ ও পরিশোধন করে একদিকে ব্যবহার করা হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে, অন্যদিকে গ্রিনহাউসে CO₂ ইনজেক্ট করার জন্য।
- উপরের দিকে বসানো গ্রিনহাউসগুলো হবে পোর্টেবল, অর্থাৎ সহজেই স্থানান্তরযোগ্য। ফলে নিচের পিটে বর্জ্য পরিবর্তন ও নতুনভাবে ব্যবহার করা যাবে।
পরিবেশবান্ধব ও টেকসই চাষ:
এই পদ্ধতিতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয় এমন বর্জ্যের জৈব অংশ পচে গিয়ে গ্যাস তৈরি করবে, যা থেকে আবার বিদ্যুৎ ও কৃষিকাজ চালানো সম্ভব। এতে যেমন টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে, তেমনি পরিবেশবান্ধব উপায়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকেও এটি এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এগিয়ে আসছে ল্যান্ডফিল:
সাসটেইন উইল্টশায়ারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি চালু হলে স্থানীয় জনগণের জন্য সারাবছর তাজা সবজি ও ফলমূল নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে পরিবেশের ওপর চাপ না বাড়িয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন যুগের সূচনা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হতে পারে—যেখানে অপ্রচলিত স্থানেও খাদ্য উৎপাদন সম্ভব এবং তা পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর হতে পারে।