চীন প্রকাশ করল ৩৭৩ মাইল গতির ‘উড়ন্ত ট্রেন’ ম্যাগলেভের প্রোটোটাইপ
চীনের রেল প্রযুক্তিতে এক নতুন মাইলফলক যুক্ত হলো। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান CRRC সম্প্রতি বেইজিংয়ে উন্মোচন করেছে একটি ম্যাগলেভ ট্রেনের প্রোটোটাইপ, যার সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার (প্রায় ৩৭৩ মাইল)।
এই চৌম্বক ভাসমান প্রযুক্তি (magnetic levitation) সম্পন্ন ট্রেনটি চলমান রেল ব্যবস্থার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটি রেল লাইনের ওপর সরাসরি না চলে মিলিমিটারের ব্যবধানে ভেসে চলে, ফলে ঘর্ষণ প্রায় নেই বললেই চলে। এতে গতি যেমন বাড়ে, তেমনি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও অনেক কম হয়। তদুপরি, এর বৈদ্যুতিক মোটর সম্পূর্ণ নির্বিষ এবং পরিবেশবান্ধব, এবং চাকার অভাবে শব্দদূষণও অনেক কম।
দ্য টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ‘উড়ন্ত ট্রেন’—যার নাম CRRC 600—আগামী দশকের মাঝামাঝি সময়ে যাত্রী পরিবহনে যুক্ত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। জাপানেও একই ধাঁচের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ চলছে, এবং দুই দেশই ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে চায়।
বর্তমানে বেইজিং থেকে সাংহাইয়ের দূরত্ব (৭৫০ মাইল) হাই-স্পিড ট্রেনে যেতে সময় লাগে সাড়ে চার ঘণ্টা। কিন্তু ম্যাগলেভ প্রযুক্তি চালু হলে এই সময় কমে দাঁড়াবে মাত্র দুই ঘণ্টা ত্রিশ মিনিটে। এর মানে, নিউ ইয়র্ক থেকে শিকাগো বা রোম থেকে বার্লিন পর্যন্ত পথও সহজেই অল্প সময়ে পাড়ি দেওয়া যাবে ভবিষ্যতের এই ট্রেনে।
প্রথমে ম্যাগলেভ প্রযুক্তি নিয়ে সন্দিহান ছিলেন Institution of Engineering and Technology-এর পরিবহন বিশেষজ্ঞ জেরেমি অ্যাকল্যাম। তবে এখন তিনি বলছেন, “নতুন প্রজন্মের সুপারকুলড চুম্বকের আগমনে এই প্রযুক্তি অনেক পরিপক্ব হয়েছে। আগের তুলনায় অনেক কম শক্তিতে এখন ট্রেন চলতে পারে। পাশাপাশি, চীন ও জাপান উভয়েই এখন এই প্রযুক্তিকে বাস্তবায়নের জন্য বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রযুক্তি সফলভাবে চালু হলে এটি বিশ্ব পরিবহন ব্যবস্থায় এক বিপ্লব বয়ে আনবে।