পুরনো শিল্পকর্মে প্রাণ ফেরাতে এমআইটি শিক্ষার্থীর তৈরি নৈতিক এআই প্রযুক্তি
শিল্প রক্ষা ও সংরক্ষণের জগতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-এর একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক শিক্ষার্থী। পুরনো ও ক্ষতিগ্রস্ত চিত্রকর্মকে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার এক অভিনব কৌশল উদ্ভাবন করেছেন তিনি।
অ্যালেক্স কাচকিন নামের এই শিক্ষার্থীর তৈরি এআই-চালিত প্রযুক্তি চিত্রকর্ম পুনঃসংরক্ষণের জগতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। সাধারণত প্রাচীন শিল্পকর্ম সংরক্ষণ করতে বছর বছর সময় লেগে যায় এবং এর অনেক কাজই হাতে করতে হয়। তবে কাচকিনের উদ্ভাবিত পদ্ধতি সেই দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়াকে দ্রুত, কার্যকর ও তুলনামূলক সাশ্রয়ী করে তুলেছে।
এই পদ্ধতিতে প্রথমে এআই ব্যবহার করে চিত্রকর্মটির এক নিখুঁত ডিজিটাল সংস্করণ তৈরি করা হয়। এরপর সেই ডিজিটাল সংস্করণের ভিত্তিতে কোন কোন অংশে রিটাচ করা প্রয়োজন, তার একটি মানচিত্র (ম্যাপ) তৈরি করা হয়। তারপর একটি পাতলা পলিমার ফিল্মে সেই ডিজিটাল রিটাচ প্রিন্ট করে মূল চিত্রকর্মের ওপর বসানো হয়, যেটিকে “মাস্ক” বলা হয়। এই মাস্কটি সহজেই সরানো যায় এবং একই সঙ্গে তার একটি ডিজিটাল কপি সংরক্ষণ করে রাখা হয় ভবিষ্যতের সংরক্ষকদের জন্য।
একটি প্রদর্শনীতে কাচকিন একটি ১৫শ শতাব্দীর ক্ষতিগ্রস্ত তৈলচিত্রের মোট ৫,৬১২টি অংশ মেরামত করেন মাত্র ৩.৫ ঘণ্টায়। যা প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে প্রায় ৬৬ গুণ দ্রুত।
কাচকিন বলেন, “আমার আশাবাদ এই যে, বিশ্বের নানা প্রান্তের সংরক্ষকরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন সব চিত্রকর্মকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবেন, যেগুলো সাধারণ দর্শকের চোখে কখনো পড়েনি।”
তিনি আরও বলেন, “এটি সম্ভবত সেই বিরল ক্ষেত্রগুলোর একটি, যেখানে শিল্পীদের স্টাইল বা রেখাচিত্রকে অন্য কাজে রূপান্তর করার জন্য এআই-এর ব্যবহার সত্যিই নৈতিক।”
সল্প বাজেটের গ্যালারি ও জাদুঘরের জন্য এই প্রযুক্তি হতে পারে এক যুগান্তকারী সমাধান, যা আলোকচিত্রের অন্ধকার ঘর থেকে তুলে আনতে পারে বহু ইতিহাসবাহী শিল্পকর্ম।