পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইয়োমিং অঙ্গরাজ্যে। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বিল গেটসের অর্থায়নে সেখানে নির্মাণ শুরু হয়েছে এক নতুন ধরনের উইন্ড টারবাইনের, যার দাবি—পारंपরিক টারবাইনের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন!

এ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় টারবাইনটি রয়েছে ডেনমার্ক উপকূলে, যার উচ্চতা ৯০৫ ফুট এবং ধারণক্ষমতা ২১.মেগাওয়াট—যা প্রায় ৭০,০০০ ঘরের বার্ষিক বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম। ইউরোপ ও চীনের বড় বড় কোম্পানিগুলো যখন আরও বিশাল ও ভারী টারবাইনের দিকে ঝুঁকছে, তখন আমেরিকার একটি কোম্পানি Airloom Energy বেছে নিয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথ।

🔄 কারুশেল ঘূর্ণনের আদলে বিদ্যুৎ উৎপাদন
Airloom-এর উদ্ভাবিত প্রযুক্তি একটি কারুশেল বা ঘূর্ণায়মান ট্র্যাকের মতো। এতে ৩৩ ফুট দৈর্ঘ্যের উল্লম্ব ব্লেডগুলো একটি ওভাল আকৃতির ট্র্যাকে ঘুরছে, যা মাটির ২৫ মিটার ওপরে স্থাপন করা হয়েছে। এই ট্র্যাকে ব্লেডগুলো ঘুরে ঘুরে বাতাস থেকে শক্তি সংগ্রহ করে, এবং সেই লিনিয়ার গতিকে রূপান্তর করে বৈদ্যুতিক জেনারেটরে।

“এয়ারলুম” প্রযুক্তির প্রস্তাবনা সংক্রান্ত একটি ভিডিও

👨‍🔬 উচ্চ বাতাস নয়, বরং অর্থনৈতিক সুবিধাই মুখ্য
Airloom বলছে, যদিও ঐতিহ্যবাহী লম্বা টারবাইনগুলো উচ্চমানের বাতাস পায়, তবুও তাদের কম খরচের এই প্রযুক্তি Levelized Cost of Electricity (LCoE)—অর্থাৎ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ—গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশাল সাশ্রয় এনে দেবে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এই খরচ ঐতিহ্যবাহী উইন্ড টারবাইনের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

এখন দেখার বিষয়, ইউটিলিটি-স্কেল প্রকল্পটি কতটা সফল হয়। যদি সফল হয়, তাহলে এটি হয়ে উঠতে পারে এক বড় গেম-চেঞ্জার প্রযুক্তি—যা আবার বিশাল উঁচু টারবাইনের মতো দৃশ্যদূষণও ঘটাবে না।

পরিশেষে, প্রযুক্তির এই অভিনব পথে বিল গেটসের বিনিয়োগ শুধুমাত্র এক অর্থনৈতিক বিপ্লব নয়, বরং এটি হতে পারে পরিবেশবান্ধব ও দৃশ্যগতভাবে কম প্রভাব ফেলে এমন এক টেকসই ভবিষ্যতের দিশা।