বুলেট ট্রেন প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব এনেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আফ্রিকার একমাত্র উচ্চগতির রেললাইনকে আরও আধুনিক ও বিস্তৃত করতে উদ্যোগ নিয়েছে মরক্কো।

বর্তমানে আল বোরা’ক নামের এই হাই-স্পিড রেললাইনটি তাঞ্জিয়ারকেনিত্রা শহরের মধ্যে চলাচল করে। নতুন প্রকল্পের আওতায় এই লাইনটি রাবাত, কাসাব্লাঙ্কামারাকেশ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। প্রায় ৪৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সম্প্রসারণ কাজের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫০০ কোটি ডলার)।

নতুন লাইনে যুক্ত হচ্ছে ১৬৮টি আধুনিক ট্রেন, যেগুলো ঘণ্টায় ৩৫০ কিমি (২১৭ মাইল) বেগে চলতে সক্ষম। পাশাপাশি, সংযুক্ত শহরগুলোর মধ্যে আরও উন্নত ট্রানজিট সিস্টেমও নির্মাণ করা হবে।

গত ২৪ এপ্রিল মরক্কোর রাজা মোহাম্মদ ষষ্ঠ এই প্রকল্পের ঘোষণা দেন। তিনি এটিকে দেশের “টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ার কৌশলগত রূপকল্প” হিসেবে উল্লেখ করেন। ২০৩০ সালের মধ্যে মরক্কো বিশ্বকাপ ফুটবলের সহ-আয়োজক হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই উপলক্ষ্যেও দেশের রেল অবকাঠামোতে এই উন্নয়ন চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করা আল বোরা’ক রেললাইন কাসাব্লাঙ্কা থেকে তাঞ্জিয়ার যাত্রা সময় ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আনে মাত্র ঘণ্টা ১০ মিনিটে। নতুন সম্প্রসারণের ফলে এই সময় আরও কমে ঘণ্টা ৪০ মিনিটে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এতে যেমন দেশের সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে, তেমনি উপকৃত হবে পর্যটকেরাও। এরই মধ্যে মরক্কোতে ২০২৪ সালে ১৭. মিলিয়ন পর্যটক এসেছে, যা দেশের জন্য এক নতুন রেকর্ড। পর্যটন থেকে ১১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়।

এদিকে ইউরোপও হাই-স্পিড রেল যোগাযোগ আরও বিস্তৃত করতে এগিয়ে যাচ্ছে। ৩৯টি বড় শহরকে যুক্ত করে নতুন একটি উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্ক গড়ার পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

তবে আফ্রিকার মাটিতে মরক্কোর এই উদ্যোগ দেশটিকে যোগাযোগ ও পর্যটনে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে- এতে কোনো সন্দেহ নেই।