সুস্বাদু ও রসালো এই ফলটি শুধু স্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যগুণেও অনন্য। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ, এনজাইম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

পুষ্টিবিদ লরা ফ্লোরেস ‘লাইভ সায়েন্স’–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, আনারসে ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজের পরিমাণ খুবই বেশি। এই দুটি উপাদান শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড় ও সংযোগকারী টিস্যু গঠনে বিশেষভাবে সহায়ক।

আনারসের আরও একটি বড় গুণ হলো, এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা হজম প্রক্রিয়া ও নিয়মিত পায়খানা নিশ্চিত করে। এতে রয়েছে থায়ামিন (ভিটামিন বি১), যা শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে, এবং ব্রোমেলিন নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম, যা প্রাকৃতিকভাবে হজমে সহায়তা করে।

এছাড়াও আনারস চর্বি ও কোলেস্টেরল মুক্ত, সোডিয়াম কম এবং ক্যালোরিও তুলনামূলকভাবে কম—ফলে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্যও এটি আদর্শ ফল।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আনারস খাওয়ার ফলে অনেক রোগের ঝুঁকি কমে যায়। যেমন:
🔸 মেনোপজ-পরবর্তী নারীদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
🔸 ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় চোখের ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সহায়ক, যা বয়সজনিত অন্ধত্বের অন্যতম কারণ
🔸 ম্যাঙ্গানিজ হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে, ফলে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়
🔸 ব্রোমেলিন এনজাইম ক্যানসার, অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে কার্যকর

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—ফ্রেশ আনারস খাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে। কেননা ক্যানজাত আনারসে চিনি ও ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকে এবং এতে ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি দেখা যায়। USDA অনুযায়ী, ক্যানজাত আনারস তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যগুণে পিছিয়ে। স্বাস্থ্যসচেতনদের জন্য প্রতিদিনের ফলের তালিকায় আনারস এক অনন্য সংযোজন। তাই আজ থেকেই এই প্রাকৃতিক পুষ্টির খনি যুক্ত করুন আপনার খাদ্যতালিকায়।